সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৭ অপরাহ্ন
রুহুল আমীন খন্দকার- বিশেষ প্রতিনিধিঃ
দেশ ও জাতির কল্যানার্থে বিরতিহীন অভিযানের মাধ্যমে মাদক, সন্ত্রাস, অস্ত্র ও জঙ্গিবাদ নির্মূল’সহ দেশের সার্বিক শান্তি শৃঙ্খলা বজায়ের লক্ষ্যে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট।
এই ধারাবাহিকতাকে অক্ষুণ্ণ রাখতে সারা দেশব্যাপী পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট কতৃক যথারীতি অভিযান চলমান রয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন পণ্যবাহী পরিবহন ও যাত্রীবাহী মাইক্রোবাস বা সিএনজির যাত্রীদের জিম্মি করে ডাকাতি সংঘটন করার অপরাধে বিদেশি পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্রসহ আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের ১১ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযানটি পরিচালনা করেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো যথাক্রমে, ১/ মোঃ সুমন চৌকিদার ওরফে সুমন মিয়া, ২/ মোঃ মোস্তফা, ৩/ মোঃ আরিফ হোসেন, ৪/ মোঃ পলাশ, ৫/ মোঃ করিম, ৬/ মোঃ হাসান, ৭/ রিপন ওরফে আকাশ, ৮/ জয়নাল আবেদিন, ৯/ মোঃ ওমর ফারুক ফয়সাল, ১০/ রাসেল, ১১/ মোঃ হাফিজুল ইসলাম। গতকাল মঙ্গলবার (২৬ জুলাই ২০২২ ইং) দিবাগত রাতে মিটফোর্ড হাসপাতালের পানির পাম্পের দক্ষিণ পাশে অভিযান চালিয়ে একটি পিকআপসহ তাদেরকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
আজ বুধবার ২৭শে জুলাই ২০২২ইং সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এতে প্রেস ব্রিফিং করেন, ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
তিনি বলেন- ডিবি পুলিশের নিকট সংবাদ আসে পুরান ঢাকা, মিটফোর্ড, সিলেট হাইওয়ে রোডে প্রায়ই ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে মিটফোর্ড হাসপাতালের পানির পাম্পের দক্ষিণ পাশে অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের ডাকাতির কৌশল সম্পর্কে গোয়েন্দা প্রধান বলেন- গ্রেফতারকৃত আসামীরা প্রথমে মালবাহীট্রাক, পিকআপ, মাইক্রোবাস’সহ সিএনজিতে থাকা যাত্রীদের টার্গেট করে। এরপর সেসব গাড়ির পিছু নিয়ে নির্জন স্থান বুঝে নিজেদের ব্যবহৃত পিকআপ দিয়ে ওই গাড়ির সামনে ব্যারিকেড দেয়। পরবর্তী সময়ে বিদেশি পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সবর্স্ব নিয়ে পালিয়ে যায়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন- ইতোমধ্যে গ্রেফতারকৃত আসামীরা ঢাকা মহানগরসহ টাঙ্গাইল, গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন জেলার মহাসড়ক ও জুয়েলারী দোকানে ডাকাতি করেছে বলে স্বীকার করেছে। এরা সকলেই পেশাদার ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য।
ডিবি কর্মকর্তা বলেন- গ্রেফতাকৃতদের হেফাজত থেকে যথাক্রমে, (ক) ১টি বিদেশি পিস্তল, (খ) ১টি ম্যাগজিন, (গ) ২ রাউন্ড গুলি, (ঘ) ১টি বড় ছোরা, (ঙ) ১টি রামদা, (চ) ২টি লোহার তৈরি চাপাতি, (ছ) পুরাতন পাটের রশি, (জ) ১টি পুরাতন গামছা, (ঝ) ১টি পিকআপ, (ঞ) ৫ টিসিএনজি উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও বলেন- ডাকাতি করার সময় কেউ বাধা দিলে এই চক্রের সর্দার সুমন চৌকিদার মানুষকে খুন করতেও দ্বিধা করেনা। সুমনের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও খুনসহ দস্যুতার মোট ১৬টি মামলা ও ৫টি গ্রেফতারী পরোয়ানা মূলতবী রয়েছে। আর অন্যান্যদের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। এবার কোতয়ালী থানায় অস্ত্র ও ডাকাতির মামলা রুজু হওয়ায় আরো দুটো মামলা যুক্ত হলো।
ডিএমপির গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার রাজীব আল মাসুদ, বিপিএম এর নির্দেশনায় কোতয়ালী জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ সাইফুল আলম মুজাহিদ এর নেতৃত্বে সঙ্গীয় ফোর্সসহ অভিযানটি পরিচালিত হয়।
অভিযানে আসামীদের গ্রেফতারের বিষয়টি আজ বুধবার ২৭শে জুলাই ২০২২ইং তারিখ ডিএমপির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যম কর্মীদের নিশ্চিত করা হয়েছে।